গোবিন্দগঞ্জে সাপ্তাহিক একটি পত্রিকায় সংবাদ লেখায় তার সম্পাদককে গাইবান্ধা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও তার লোকজন পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছেন। আশঙ্কাজনক আহতাবস্থায় তাকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের ক্লিনিকের বিরুদ্ধে স্থানীয় সাপ্তাহিক কাটাখালি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এর জেরে বুধবার সন্ধ্যা সাতটার মহিমাগঞ্জ সড়ক থেকে ওই পত্রিকার সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেনকে সংসদ সদস্যের লোকজন তুলে নিয়ে যায়। পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সংসদ সদস্যের সামনে হাজির করা হয়। এসময় সংসদ সদস্য নিজে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আতাউর রহমান বাবলু ও কোচাশহর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান এবং ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাকে বেদম প্রহার করে। এতে মোয়াজ্জেম সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন। পরে সেখানে মাথায় পানি ঢেলে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করা হয়। খবর পেয়ে মোয়াজ্জেমের স্ত্রী নাজমুন নাহার উপজেলা চত্বরে ছুটে যান।
নাজমুন নাহার বলেন, স্বামীকে সজ্ঞাহীন অবস্থায় দেখতে পেয়ে সংসদ সদস্য ও তার লোকজনের কাছে অনুনয় বিনয় করে স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা চান। পরে সেখান থেকে উদ্ধারের পর গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
গোবিন্দগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আতাউর রহমান সরকার, উপজেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক ও ওয়ার্কাস পার্টির উপজেলা সম্পাদক মতিন মোল্লা সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোকাদ্দেস আলী বাদুসহ অনেকে হাসপাতালে আহত সম্পাদক মোয়াজ্জেমকে দেখতে যান। তারা সংসদ সদস্য ও তার তার লোক জনের হাতে একজন পত্রিকার সম্পাদক প্রহারের ঘটনার নিন্দা জানান। তারা বিষয়টি গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি ও পুলিশ সুপারকে জানালেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় পুলিশের ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম জাহিদুল ইসলাম সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মোয়াজ্জেম হোসেন একজন খারাপ লোক। সব সময় মানুষের পিছনে লেগেই থাকেন। লেখালেখি করেন। তাই এমপি সন্ধ্যায় তাকে ডেকে শাসন করেছেন মাত্র। পরে মোয়াজ্জেমকে তার স্ত্রীর হাতে তুলে দেন এমপি। ওসি আরও বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ শহরের হাসপাতাল মোড় (হীরকপাড়া) এলাকায় অবস্থিত মোয়াজ্জেমের বাড়িতে তল্লাসি চালিয়ে লাইসেন্স বিহীন একটি পুরাতন মোটর সাইকেল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।